উত্তম উপন্যাসের মতো এই উপন্যাসের অন্তর্নিহিত বৈশিষ্ট্য পাঠককে প্রবলভাবে আকৃষ্ট করে। পুরো বইখানিতে ঘটনাপ্রবাহ একইভাবে আন্দোলিত হয়েছে। উপন্যাসের চরিত্রগুলো অত্যন্ত স্পষ্ট এবং পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য খুশবন্ত সিং তাদেরকে অত্যন্ত জাঁকজমকের সাথে বেগবান করেছেন। সেই সঙ্গে বেগবান করেছেন তাদের ভালোবাসা ও প্রতিশোধ স্পৃহা,যা জড়িয়ে আছে দৈনন্দিন কাজের সাথে। গ্রামীন সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের ঔদ্ধত্য ও সাহসিকতা সমগ্র কাহিনীতে বিধৃত হয়েছে। ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগের রাজনৈতিক বিপ্লবের পটভূমি ও বিপ্লবপরবর্তী সময়ে তাদের ভেঙে যাওয়া জীবনধারার ঘটনাবলী অত্যন্ত স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে উপন্যাসখানিতে। এটা শুধু শ্রমসাধ্য ও অতি দক্ষতায় সৃষ্ট গল্প-কাহিনী নয়, সামাজিক দলিল হিসাবে এর মূল্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। এই দলিলে স্পষ্টভাবে বিধৃত হয়েছে পাকিস্তান সৃষ্টিসহ ব্যাপক উত্থান-পতনের কাহিনী। ঐতিহাসিক, সমাজ-বিজ্ঞানী এবং সাধারণভাবে মানব বিষয়ে উৎসুক ছাত্রের কাছে বইখানি খুবই প্রাসঙ্গিক।
খুশবন্ত সিং একজন বর্ণাঢ্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী খ্যাতিমান লেখক, কলামিস্ট ও সাংবাদিক। জন্ম পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের হাদালী-তে ১৯১৫ সালে। জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতি, ইতিহাস - বহুবিধ বিষয়ে তিনি বই রচনা করেছেন। ট্রেন টু পাকিস্তান উপন্যাসের জন্য তিনি ১৯৫৩ সালে গ্রোভ প্রেস এ্যাওয়ার্ড পান। ১৯৭৪ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি তাঁকে 'পদ্মভূষণ' সম্মানে ভূষিত করেন। ১৯৮০-৮৬ সালে তিনি ভারতীয় লোকসভার সদস্য ছিলেন।
আবু জাফর (জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮) লেখক ও অনুবাদক।পুরো নাম আবু জাফর মোঃ ইকবাল। যশোর এম. এম. কলেজ থেকে স্নাতক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম. এ. (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) পাস করার পর তিনি ১৯৭০ সালে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন। ২০০৬ সালে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পূর্বে তিনি তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ : মওলানা আকরাম খাঁ-এ ভারসেটাইল জিনিয়াস, মুসলিম ফেস্টিভ্যালস ইন বাংলাদেশ, মোগল যুগের বিচার, রাজভবন থেকে বঙ্গভবন, রসুল মুহাম্মদ (স); অনূদিত গ্রন্থ : মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, মহানবীর শাশ্বত পয়গাম, বিশ্বনবী মুহাম্মদ (স), মহানবীর জীবন আলো নাহজুল বালাগা, বাঙালার ইতিহাস, ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহ, কালের সাক্ষী ঢাকা, বীর ও বীরবন্দনা, বাঙলা ভাগ হল,তমস।