অজস্র প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ৫২ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অর্জন ঈর্ষণীয়। তবুও আত্মতুষ্ট না থেকে বাংলাদেশকে তার জন্মকালীন অঙ্গীকারের পথে, মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশ্রম্নতি বাস্তবায়নের স্বপ্নে অগ্রসর করতে অর্থনীতি, রাজনীতি, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা—স্বাস্থ্যসহ আরও কিছু খাতে সংস্কার অনিবার্য হয়ে উঠেছে। রাষ্ট্র ও জনগণের অনন্ত সম্ভাবনার প্রকৃত বাস্তবায়ন ঘটাতে হলে এগুলোর কোনো বিকল্প নেই।
বরেণ্য অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন আজকের বাংলাদেশের করণীয় বিষয়ে তাঁর জীবনের অন্তদৃর্ষ্টি হাজির করেছেন এই পুস্তিকাটিতে। গণতান্ত্রিক, উদারপন্থি, প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলার পথ সন্ধানই বর্তমান গ্রন্থের মূল উপজীব্য। শুধু অর্থনীতিবিদ, পরিকল্পনাবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও রাজনীতিবিদদের জন্য নয়, বাংলাদেশকে ভালোবাসেন, বাংলাদেশের ভালোমন্দ নিয়ে ভাবেন এমন প্রতিটি মানুষকে ভাবনার খোরাক জোগাবে ক্ষুদ্রকায় কিন্তু সারগর্ভ এই কাজটি।
মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন জন্ম ১৯৪২ সনে হবিগঞ্জের রতনপুর গ্রামে । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উন্নয়ন অর্থনীতিতে এমএ (ডাবল) এবং পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৬ সালে তদানীন্তন সিভিল সার্ভিস অফ পাকিস্তানে যোগ দেন। জাতির জনকের একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময়ে বাংলাদেশের সংবিধান, প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও ড. কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট প্রণয়নের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য ও প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট তিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর থাকাকালে মুদ্রানীতি এবং ব্যাংকিংখাত সংস্কারে হাত দেন, ঋণখেলাপি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এর ফলে রেমিট্যান্স-প্রবাহে অগ্রগতি হয় এবং মুদ্রাস্ফীতি ন্যূনতম পর্যায়ে নেমে যায়। সদা কর্মচঞ্চল ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের ব্যস্ত জীবনে নির্মল সুখ, শান্তি, আনন্দ ও প্রশান্তির ঝরনাধারা হলেন স্ত্রী