আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী একজন উন্নয়ন কর্মী, গবেষক, লেখক, শিক্ষাবিদ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। প্রায় চার যুগ ধরে দেশ ও বিদেশের মর্যাদাসম্পন্ন অনেকগুলো পত্রিকা এবং বিজ্ঞান সাময়িকীতে তিনি মানব উন্নয়নের অনেকগুলো ক্ষেত্র নিয়ে লিখেছেন। বিশ্বখ্যাত চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেট বৈশ্বিক উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য তাঁকে সম্মানিত করেছে।
পেশাগত জীবনে মোশতাক চৌধুরী ছিলেন ব্র্যাকের ভাইস চেয়ারম্যান, নির্বাহী পরিচালক এবং গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা। এছাড়া আমেরিকার রকেফেলার ফাউন্ডেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ফেলো এবং কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হিসেবেও তিনি কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। বাংলাদেশ ও বিশ্বের অবহেলিত মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নেয়া বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনি প্রণিধানযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন।
অজস্র অর্জন এবং সাফল্যে সমৃদ্ধ এ মানুষটির জীবনী লেখার প্রয়োজন অনুভব করেছেন তাঁর সুহৃদ মতিলাল দেব রায়। এই কাজটি করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ের ব্যক্তিগত স্মৃতি যেমন তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন এ গ্রন্থে, পাশাপাশি মোশতাক চৌধুরীর জীবন, কর্ম এবং তাঁর কাজ নিয়ে বিদগ্ধজনের মূল্যায়নও পাওয়া যাবে ব্র্যাকের এক নিভৃতচারী রূপকার বইটিতে। একজন উন্নয়ন গবেষক ও নীতিনির্ধারকের জীবনের এসব গল্প ও ঘটনাগুলো সকল পাঠকের জন্যই শিক্ষামূলক ও প্রেরণাদায়ী হবে।
মতিলাল দেব রায় জন্ম বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার নইনারপার গ্রামে ১৯৫২ সালে। তিনি স্থানীয় এম এ ওয়াহাব হাই স্কুল থেকে এসএসসি এবং সিলেট এমসি কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেন। পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি এবং পরিসংখ্যান বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। দেশে এবং বিদেশে তিনি সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় দীর্ঘসময় কাজ করেছেন। একজন উন্নয়নকর্মী ও সমাজগবেষক হিসেবে সমাজের বিভিন্ন রকমের অসঙ্গতি এবং উন্নয়নের বহুবিধ সমস্যা চিহ্নিতকরণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্র-পত্রিকায় অনেক লেখালেখি করেছেন। বাংলাদেশের অবহেলিত জনগোষ্ঠী চা শ্রমিকের দৈনন্দিন জীবন, সংস্কৃতি, প্রচলিত ভাষা, শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে অনেক তথ্য, দেশের মূল স্রোতধারা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা বিষয়গুলি শিকড় থেকে তুলে এনে দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। মতিলাল দেব রায়ের স্ত্রী লক্ষ্মীসেন চৌধুরী, কন্যা ডা. পদ্মজা দেবরায়, জামাতা ডা. টুটুল চৌধুরী এবং