- Shop
- Social Sciences
- যৌতুকের সংস্কৃতি
যৌতুকের সংস্কৃতি
Language: Bangla |
Tags :
Book Info
‘যৌতুক’ বাঙালি সমাজের এক অতি পুরনো ব্যাধি। একসময়ে বাঙালি হিন্দু-সমাজে যৌতুক ছিল ‘স্ত্রীধন’ অর্থজ্ঞাপক। বাঙালি মুসলিম-সমাজে বিশ শতকের আগে বরপক্ষের দাবি ও বধূ-নির্যাতনের ঘাতকরূপে যৌতুক অথবা বরপণের তেমন অস্তিত্ব ছিল না। কালক্রমে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সমাজে যৌতুক প্রচলিত হয়েছে। বাঙালি পিতৃতান্ত্রিক সমাজকাঠামোতে হিন্দু ও মুসলিম ধর্মভিত্তিক নীতি, শাস্ত্র ও বিধানের পার্থক্য ঘুচিয়ে ‘যৌতুক’ আজ একবিংশ শতাব্দীতে ‘যৌতুকের সংস্কৃতি’তে পরিণত হয়েছে। যৌতুক-সংস্কৃতির এই চিত্র বিগত দুই শতকের সাহিত্যিকদের বিভিন্ন রচনায়, সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্রে ছড়িয়ে রয়েছে। লেখক এগুলো তীক্ষ্ণভাবে বিশ্লেষণ করে যৌতুক দাবির উদ্ভব, এর বিকাশ এবং এর বিরুদ্ধে জনমত সংগঠনের বিবরণ অনুসন্ধান করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন, কন্যাপণের দৃষ্টান্ত ক্রমশ কমে এলেও বরপণের দৌরাত্ম কমেনি। মধ্যযুগীয় বংশকৌলিন্য প্রথার স্থান দখল করেছে ধনকৌলিন্য, শিক্ষাকৌলিন্য ও আভিজাত্যকৌলিন্য। শিক্ষার বিস্তার ও সামাজিক অগ্রগতি সত্ত্বেও যৌতুকপ্রথা ‘যৌতুক-সংস্কৃতি’তে রূপান্তরিত হয়েছে। যৌতুকবিরোধী আইন হয়েছে, কিন্তু যৌতুক বন্ধ হয়নি। লেখক বাংলাদেশের ৩০ বছরের সংবাদপত্র পর্যালোচনা করে এবং বাংলাদেশের নারী জাগরণের পথিকৃৎ রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্মস্থান পায়রাবন্দে জরিপ পরিচালনা করে এই সিদ্ধান্ত টেনেছেন যে যৌতুক-বিরোধী আইন বাংলাদেশের সকল নারীর যৌতুক নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রযোজ্য হলেও বাস্তবে এর তেমন প্রয়োগ নেই। তাই ‘বধূ’ বা নারী নির্যাতন সমাজে ব্যাপক মাত্রায় রয়েই গেছে। বাঙালি সমাজে ও পরিবারে বধূ-নির্যাতনের এই ঘটনা অতিপুরনো হলেও চিরনতুনরূপে কিভাবে যৌতুকের আশ্রয়ে স্থায়ী আসন করে নিয়েছে এই পুস্তকে তার সূত্র অনুসন্ধান করা হয়েছে। যৌতুক বিষয়ক এই গবেষণা-পুস্তকটি লেখকের পিএইচ.ডি থিসিস। পুস্তকটি সমাজকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, আইনজীবীসহ সচেতন নাগরিকদের বিশেষ প্রয়োজন মেটাবে তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।