বাংলাদেশে শিশু অধিকার: হারানো শৈশব: তার ইতিকথা
https://uplbooks.com/shop/9840501810-10644 https://uplbooks.com/web/image/product.template/10644/image_1920?unique=56f7a2e
Language: Bangla |
Tags :
Book Info
১৯৯০ সালের আগষ্ট মাসে বাংলাদেশে সরকার শিশু অধিকার শীর্ষক জাতিসংঘ সনদ অনুমোদন করে। অতঃপর বাংলাদেশ সরকার শিশু অধিকার রক্ষা ও অনুশীলনের ক্ষেত্রে আদর্শ ও মান প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে কী ভূমিকা পালন করছে, এই ঘটনার সূত্র ধরে তা যাচাই করা বোধ হয় যথাযথ হবে। যেমন, সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা চালু, শিশুশ্রম আইনের কার্যকর প্রয়োগ এবং শিশু পতিতাবৃত্তি রোধ প্রভৃতি বিষয় উদাহরণ হিসেবে এখানে উল্লেখ করা যায়। বেশ কিছু ভালো আইন ও সম্ভাবনাময় নীতি থাকা সত্ত্বেও দেখা যাচ্ছে যে, সে সবের প্রয়োগে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যাপকভাবে অদক্ষ। এই গবেষণার মধ্য দিয়ে যেসব তথ্য উদ্ধার করা হয়েছে তার মধ্যে দুর্নীতি চর্চার বিষয়টি হয়তো সবচেয়ে বেদনাদায়ক তথ্য। দেখা যাচ্ছে, রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা শিশুদের রক্ষার জন্য বিদ্যমান আইন প্রয়োগ করছে না, বরং আইন লঙ্ঘনকারীদের কাছ থেকে অর্থ আয়ের উপায় হিসেবে ওই আইনকে ব্যবহার করছে। এ ধরনের দুর্নীতির ফলে শিশুদের কী মূল্য দিতে হচ্ছে তা এ বইয়ে অন্তত দু'টি স্থলে—পতিতালয় ও বিড়ি কারখানার ঘটনাসূত্রে বর্ণিত হয়েছে। মোটামুটি ৮ থেকে ১৬ বছর বয়সী বাংলাদেশী শিশু ও কিশোরদের নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এ বইয়ে। এই শিশু-কিশোরদের অধিকার ভোগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বিরাট অসামঞ্জস্যের বিষয়টিও এ বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে। যেমন, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর শিশু ও তাদের গৃহে কর্মরত অল্প বয়সী গৃহপরিচারিকা এই উভয়ের বয়স হতে পারে মোটামুটি একই রকম, কিন্তু তাদের ভূমিকা, অধিকার ও দায়-দায়িত্ব প্রভৃতি ক্ষেত্রে রয়েছে সুগভীর পার্থক্য। শেষোক্তদের স্কুলে পাঠানো হয় না, শেখানো হয় কেবল ঘরের কাজ। কেননা তাদের অবস্থান যে নিচে এবং তাদের অধিকারের যে অভাব রয়েছে, সেটা তাদের বুঝিয়ে দেয়া হয়। অন্যদিকে স্কুলের সাফল্য অর্জনের ব্যাপারে প্রথমোক্তদের ওপর প্রচণ্ড চাপ দেওয়া হয় এবং তাদের উচ্চতর অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। বাঙালি শিশুদের পরিপকৃতা অর্জনের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে তাদের ‘বুঝের স্তরে’ উন্নীত হওয়া। কিন্তু কী বোঝা উচিত, কীভাবে এবং কখন—বিভিন্ন পরিবেশে বেড়ে ওঠা শিশুদের মধ্যে সেক্ষেত্রে ব্যাপক ভিন্নতা রয়েছে। বাংলাদেশের সমাজ ব্যাপক মাত্রার শ্রেণী ও জেন্ডারগত অসমতায় আক্রান্ত। এমন একটি সমাজের কাঠামোর ক্ষেত্রে শৈশবের স্বতন্ত্র চেতনাগত দিকগুলিকে দেখা যাচ্ছে বেশ সংকটাপন্ন। একই বয়সের শিশুরা একই সুযোগ-সুবিধা-অধিকার লাভ করছে বা একই রকম বোধ-বুদ্ধির অধিকারী হচ্ছে এমন দৃষ্টান্ত খুব বেশি নেই ।
তেরেস ব্লঁশে
তেরেস ব্লঁশে (Thérèse Blanchet) ১৯৭৮ সাল থেকে বাংলাদেশে গবেষণা করছেন। তাঁর নৃতাত্ত্বিক মাঠপর্যায়ের কাজ তাঁকে নিয়ে যাচ্ছে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শহুরে বস্তিতে, হাওর থেকে সমতল ভূমিতে, পতিতালয় থেকে মাজারে। বাংলাদেশের সমাজ সম্পর্কে তাঁর দীর্ঘ সতের বছরের সমৃদ্ধ ও অস্বাভাবিকভাবে বিস্তৃত অভিজ্ঞতার প্রতিফলন রয়েছে তাঁর লেখায়। এখন তেরেস ব্লঁশে কাজ করছেন রাড্ডা-বারনেন-এ। সেখানে তিনি বিভিন্ন শৃঙ্খলার লোকদের নিয়ে গঠিত একটি দলের নেতৃত্ব করছেন। এই দল শিশু ও শৈশবের ওপর গবেষণা পরিচালনা করছে। তিনি Women, Pollution and Marginality: Meanings and Rituals of Birth in Rural Bangladesh. (ইউপিএল, ১৯৮৪) শীর্ষক গ্রন্থের রচয়িতা।