প্রায় পঞ্চাশ বছরকাল আগে স্বাধীনতা অর্জিত হলেও দক্ষিণ এশিয়ার একশত কোটি মানুষ অর্থনৈতিক উন্নতি, সামাজিক উৎকর্ষ অথবা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রগতি সাধন করতে পারেনি।
মওদুদ আহমদ এই বইতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহ, বিশেষ করে ভারত, যে সম্ভাব্য ক্ষমতানুযায়ী উন্নতি লাভ করতে পারেনি, তার কিছু কিছু কারণ ব্যাখ্যা করেছেন।
লেখক মনে করেন দক্ষিণ এশিয়ার একটি অগ্রবর্তী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে ভারত উন্নয়নের জন্য টেকসই প্রবৃদ্ধির মডেল দিতে পারেনি, পাশাপাশি সে তার ক্ষুদ্র প্রতিবেশীদের সামাজিক ও রাজনৈতিক ভীতি দূর করতে সাহায্য করেনি। কাশ্মীর ইস্যু এবং পারমাণবিকীকরণ এ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় ভীতির কারণ। ফলে যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে তাতে এ অঞ্চলের উন্নয়ন ব্যাহত হবে।
লেখকের ভাষায় দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের ভূমিকা নানাবিধ কারণে অনন্য। তিনি এর উন্নয়ন, অর্থনীতি, সমাজ ও রাজনীতি-সংক্রান্ত সমস্যা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে আলোচনা করেছেন। লেখক বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থা সম্পর্কে সাহসী মন্তব্য করতেও নিজেকে নিরত রাখেননি। লেখকের স্বপ্নকল্প যে, বাংলাদেশ একটি বিশাল সম্ভাবনাময় দেশ এবং দেশটি এই উপমহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশকে অর্জনে নানাভাবে সাহায্য করতে পারে।
সবশেষে লেখক বেশ কিছু পরামর্শ রেখেছেন, যেগুলো অনুসরণ করলে, তিনি মনে করেন, পরিস্থিতির উন্নতি হবে এবং এই অঞ্চল বিশ্বায়নের মোকাবেলা করতে অধিকতর সফলকাম হবে।
মওদুদ আহমদ (১৯৪০-২০২১), ব্যারিস্টার, সাবেক সাংসদ, প্রাক্তন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী। তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। একজন দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান হিসেবে তার খ্যাতি রয়েছে। বাংলাদেশের সমকালীন রাজনীতিতে তিনি নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন দীর্ঘদিন থেকেই। সেই সঙ্গে একজন ব্যতিক্রমী রাজনীতিক হিসেবে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে নিয়মিত লেখালেখি করে এসেছেন।
জনাব আহমদ জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৭৬, ১৯৮০, ১৯৯৬, ২০০৯ ও ২০১০), অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৮১, ১৯৯৮, ২০১১ ও ২০১২) সমূহের ফেলো। তিনি দি জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের (১৯৯৭) ইলিয়ট স্কুলে একজন ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবেও অধ্যাপনা করেছেন।
ইংরেজী ও বাংলা ভাষায় তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১৪টি।