বাস্তব জীবনের অর্থনৈতিক সমস্যা সম্পর্কে মূলধারার অর্থনীতির বক্তব্য তুলে ধরার লক্ষ্যে এই গ্রন্থে লেখকের পনেরটি প্রবন্ধ সন্নিবেশিত করা হয়েছে। বইটির শুরু ‘দানখয়রাতের অর্থনীতি’ নিয়ে। আরও রয়েছে ‘দুর্নীতির অর্থনীতি’, ‘সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি’, ‘মেরামত ও পরিচালনার অর্থনীতি’, ‘বাংলাদেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণের রাজনৈতিক অর্থনীতি’, ‘স্বাস্থ্য অর্থনীতি’ ও ‘লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের অর্থনীতি’ সম্পর্কে মনোজ্ঞ বিশ্লেষণ। অর্থনীতির সবচেয়ে জটিল সমস্যা অর্থনৈতিক অসাম্য সম্পর্কে রয়েছে দুটি নিবন্ধ। লেখকের দৃষ্টি শুধু বর্তমানেই নিবদ্ধ নয়। ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক প্রবণতা সম্পর্কে বিশ্লেষণ রয়েছে ‘আজি হতে শতবর্ষ পরে’ শীর্ষক প্রবন্ধে। অতীতের প্রসঙ্গ এসেছে দুটি নিবন্ধে: ‘সোনার বাংলা: অর্থনৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষিত’ এবং ‘ভারতীয় অর্থনীতির উত্থান ও পতন’।
তিনটি মূল্যবান রচনা রয়েছে অর্থনীতিবিদদের সম্পর্কে। ‘অর্থনৈতিক মানুষ ও মানুষ হিসাবে অর্থনীতিবিদ’ রচনায় দেখানো হয়েছে কীভাবে অর্থনীতির পূর্বানুমান এবং পক্ষপাত অর্থনীতিবিদদের ব্যক্তিগত জীবনকে প্রভাবিত করেছে। একটি প্রবন্ধে অর্থনীতির দর্শনের বিবর্তন বিশ্লেষিত হয়েছে। গ্রন্থকারের সবচেয়ে পছন্দের অর্থনীতিবিদ হলেন মোল্লা নস্রুদ্দীন। ‘মোল্লা নস্রুদ্দীনের অর্থনীতি’ নিবন্ধে গ্রন্থকার সুন্দরভাবে দেখিয়েছেন যে, মোল্লার গালগপ্প ও কৌতুক-চুটকির মধ্যেই আধুনিক অর্থনীতির অনেক মূল্যবান সূত্র লুকিয়ে রয়েছে।
ইংরেজিতে একটি প্রবাদ রয়েছে, যুদ্ধ এতই গুরুত্বপূর্ণ যে তা শুধু সেনানায়কদের কাছে ছেড়ে দেওয়া যায় না। অর্থনৈতিক সমস্যাও এত জরুরি যে, এ সব সমস্যার সমাধানের জন্য শুধু অর্থনীতিবিদদের উপর নির্ভর করা বাঞ্ছনীয় নয়। আশা করা হচ্ছে যে, এই বই অর্থনীতি নামক হতাশাবাদী ও দুর্বোধ্য বিজ্ঞান সম্পর্কে বিতর্কে অংশগ্রহণের জন্য সাধারণ পাঠকদের উদ্দীপ্ত করবে।
আকবর আলি খান (জন্ম ১৯৪৪) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ১৯৬৪ সালে বি. এ. অনার্স ও ১৯৬৫ সালে এম. এ. কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ১৯৭৭ সালে এম. এ. এবং ১৯৭৯ সালে পিএইচ. ডি. ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। ১৯৭১ সালে মুজিবনগরে অস্থায়ী সরকারের প্রতিরক্ষা বিভাগের উপসচিব পদে নিয়োজিত ছিলেন। প্রেষণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে এবং বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পরিচালকমণ্ডলীর সদস্য হিসাবে প্রায় পাঁচ বছর শিক্ষকতা ও চার বছর ধরে (১৯৮৭-১৯৯১) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের অর্থনৈতিক মিনিস্টার হিসাবে কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, অর্থ বিভাগের সচিব ও কেবিনেট সচিব, বিশ্বব্যাংকে বিকল্প নির্বাহী পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের