১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের সময় অনেকেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যত সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। একটি ক্ষুদ্র ভূখণ্ডে বিশাল জনগোষ্ঠী, সীমিত জমি নিয়ে কৃষির ওপর নির্ভরশীলতা, এবং দারিদ্র্য-সব মিলিয়ে অবস্থা বাস্তবিকই কঠিন ছিল। পাঁচ দশক অতিবাহিত হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, সেসব বাধা অতিক্রম করে উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কেমন করেছে দেশ? ভবিষ্যত সম্ভাবনাই বা কেমন? দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনীতির অর্জন ভালো হলেও অন্যান্য সফল দেশের তুলনায় দেশটি কেমন করছে সেটিও গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশের অর্থনীতি ছিল কৃষিভিত্তিক এবং শিল্প খাত ছিল প্রাথমিক স্তরে। পাঁচ দশকে কী ধরনের পরিবর্তন হয়েছে অর্থনৈতিক কাঠামোতে? প্রবৃদ্ধি অর্জনে কী ধরনের ভূমিকা পালন করেছে কৃষি এবং শিল্প? দারিদ্র্য যেখানে প্রকট এবং অর্থনীতি মূলত কৃষিভিত্তিক, সেখানে খাদ্য নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে দেশটির অর্জন কেমন? দারিদ্র্য হ্রাস এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সাফল্য কতটা? লিঙ্গ-ভিত্তিক অসাম্য কমিয়ে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে কতটা অগ্রগতি হয়েছে? এসব প্রসঙ্গের বিশ্লেষণ রয়েছে এই গ্রন্থে।
হালনাগাদ উপাত্তের ভিত্তিতে বিশ্লেষণের সাথে সাথে বিভিন্ন বিষয়ের তাত্ত্বিক প্রেক্ষিতও উপস্থাপিত হয়েছে গ্রন্থটিতে। সরকারের নীতিমালা প্রণয়নে সহায়ক হতে পারে এমন সুপারিশও রয়েছে এতে। ছাত্র, শিক্ষক, গবেষক, নীতিনির্ধারক, উন্নয়নকর্মী এবং নাগরিক সমাজের সদস্যসহ সব পাঠকের কাছে বইটি সমাদৃত হবে বলে আশা করা যায়।
"রিজওয়ানুল ইসলাম (জন্ম: ১৯৪৯) একজন লব্ধপ্রতিষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ও আইএলও'র এমপ্লয়মেন্ট সেক্টরের প্রাক্তন বিশেষ উপদেষ্টা। তিনি আইএলও' র বিভিন্ন বিভাগে পরিচালক পর্যায়ে কর্মরত ছিলেন। অধ্যাপনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে।
ড. ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে সম্মানসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী এবং অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের তত্ত্বাবধানে লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স থেকে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। শিক্ষাজীবনে তিনি মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর- সকল স্তরে প্রথম স্থান অর্জন করার বিরল কৃতিত্বের অধিকারী।
ড. ইসলামের গবেষণার বিষয় প্রধানত উন্নয়ন অর্থনীতি। তিনি বিশেষ করে আলোকপাত করেছেন কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য ও অর্থনৈতিক সংকটের মত বিষয়গুলিকে। তাঁর রচিত (একক ও যুগ্মভাবে এবং সংকলিত) বইয়ের সংখ্যা ১৪ এবং বিশ্বের প্রথম শ্রেণীর গেবষণামূলক সাময়িকীসমূহে এবং বিভিন্ন গ্রন্থে প্রকাশিত গবেষণামূলক রচনার সংখ্যা ৪৩টি।
তাঁর লিখিত বই উন্নয়নের অর্থনীতি (ইউপিএল), সম্পাদিত
রুশিদান ইসলাম রহমান বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)-এর প্রাক্তন গবেষণা পরিচালক। বর্তমানে সেন্টার ফর ডেভলপমেন্ট এন্ড এমপ্লয়মেন্ট রিসার্চের এক্সিকিউটিভ চেয়ারপার্সন। বাংলাদেশের অর্থনীতি, কর্মসংস্থান, বেকারত্ব ও কৃষি উন্নয়ন বিষয়ে তাঁর রচিত গবেষণা-প্রবন্ধসমূহ এবং গ্রন্থাবলি বহুল পঠিত।
কাজী সাহাবউদ্দিন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)-এর প্রাক্তন মহাপরিচালক। অর্থনীতি বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে অনেক প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন সম্পাদিত গ্রন্থের অধ্যায় যেমন লিখেছেন, তেমনি নিজে কয়েকটি বইও সম্পাদনা করেছেন।