নীরদ সি চৌধুরী (১৮৯৭-১৯৯৯) জন্মেছিলেন ময়মনসিংহের কিশোরগঞ্জে। বাংলা ভাষার ইতিহাসে অন্যতম বিতর্কিত লেখক নীরদ সি চৌধুরী সাহিত্য জীবন শুরু করেন আলোচিত বিদ্রূপাত্মক পত্রিকা শনিবারের চিঠি-তে লেখালেখির মধ্য দিয়ে। বাংলা ভাষায় চারটি বই লিখলেও তাঁর প্রধান পরিচিতি ইংরেজী ভাষার লেখক হিসাবেই। মৃত্যুর পরও তাঁকে ঘিরে কৌতূহল ও বিতর্কের সমাপ্তি ঘটেনি। আত্মঘাতী বাঙালী, বাঙালী জীবনে রমণী, The Autobiography of an Unknown Indian প্রভৃতি গ্রন্থে তাঁর প্রকাশিত বক্তব্য ও দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে আজও আলোচিত এবং প্রাসঙ্গিক রেখেছে। কেন নীরদ সুদূর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পরবাসী হলেন? কেনইবা তিনি আপন সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ঔপনিবেশিক শাসকের সংস্কৃতির একান্ত অনুরাগীতে পরিণত হলেন? ইসলাম ও মুসলমানদের বিষয়ে নীরদ সি চৌধুরীর বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাখ্যা কী? নীরদের সদা বিষণ্ণতার উৎস কী? ইয়ান অ্যালমন্ড এই সব প্রশ্নেরই জবাব দেয়ার চেষ্টা করেছেন নীরদ সি চৌধুরীর মন গ্রন্থটিতে। এসব ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তাঁকে আশ্রয় নিতে হয়েছে মনোবিশ্লেষণ তত্ত্বের, উত্তর-ঔপনিবেশিক তত্ত্বের, মার্কসবাদের, ‘অ্যাফেক্ট থিওরি’ বা দেহাবেগ তত্ত্বের এবং ইতিহাসবাদের। এখন পর্যন্ত নীরদ চৌধুরীকে নিয়ে যতগুলো বই লেখা হয়েছে, নীরদ সি চৌধুরীর মন তাদের মাঝে সবচেয়ে তথ্যবহুল এবং গভীর। সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন কিংবা রাজনীতিতে আগ্রহ আছে এমন যে কারো জন্যই এ বই গুরুত্বপূর্ণ।
ইয়ান অ্যালমন্ড বিশ্বসাহিত্যের অধ্যাপক। বর্তমানে তিনি অধ্যাপনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাতার শাখায়। পড়াশোনা করেছেন যুক্তরাজ্যের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকেই বিশ্বসাহিত্যে গবেষণার জন্য পিএইচডি ডিগ্রি প্রাপ্তি এখন পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা পাঁচ। তাঁর সুখ্যাতি মূলত ইসলাম ও সুফিবাদ সম্পর্কে তাঁর গবেষণামূলক কাজের জন্য। তাঁর বাকি চারটি বইয়ের নাম হলো টু ফেইথস, ওয়ান ব্যানার (হারভার্ড, ২০০৯), হিস্ট্রি অব ইসলাম অ্যান্ড জার্মান ঘট (রুটলেজ, ২০০৯), দ্য নিউ অরিয়েন্টালিস্টস (আই বি টরিস, ২০০৭) এবং সুফিজম অ্যান্ড ডিকন্সস্ট্রাকশন (রুটলেজ, ২০০৪)। আরবি, ফার্সি, কোরিয়ানসহ এখন পর্যন্ত সাতটি ভাষায় তাঁর লেখা অনূদিত হয়েছে।
রায়হান রহমান পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। বুয়েট থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পড়াশোনা করার পর এমএ করেছেন ইংরেজি সাহিত্যে। বাংলা এবং ইংরেজি দুই ভাষাতেই সমান দক্ষ, তাই লেখালেখিও দুই ভাষাতেই।