একটি জাতির জন্ম: যৌন সহিংসতা ও দায়মুক্তি বইটি ভারতীয় প্রকাশনা সংস্থা জুবান থেকে প্রকাশিত Of a Nation Born-এর বাংলা এবং পরিবর্ধিত সংস্করণ। ২০১৬ সালে প্রকাশিত মূল বইটির প্রবন্ধগুলির বঙ্গানুবাদের সাথে যুক্ত হয়েছে কয়েকটি সাক্ষাৎকার, কেস স্টাডি, কবিতা, উপন্যাস ও গল্পের অংশবিশেষ। রচনাগুলোর মূল উপজীব্য হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এবং পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলাদেশে সংঘটিত যৌন নির্যাতন এবং ধারাবাহিক বিচারহীনতার আখ্যান।
১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ জন্ম সাক্ষী হয়ে আছে বিপুল রক্তক্ষয় এবং যৌন সহিংসতার। বিস্তর যৌন সহিংসতা, যৌন দাসত্ব এবং অন্যদিকে অপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় না আনার বিষয়গুলো এখন সুবিদিত। এই বইতে স্থান পাওয়া প্রবন্ধগুলো ব্যক্তি ও সমাজ পর্যায়ে বিচারহীনতার গতিশীল প্রকৃতিকে তুলে ধরেছে। আর সেটা করতে গিয়ে লেখকরা কেবল বিচারহীনতার অনুকূল পরিস্থিতি সম্পর্কেই আলোচনা করেননি, বরং যেসব উপাদান সেগুলোকে উস্কে দেয় তার বিবরণও দিয়েছেন। তাঁরা জানার চেষ্টা করেছেন এগুলো কীভাবে এত গভীরে প্রোথিত হল অথবা মানবিক, বৈশ্বিক এবং জাতীয় পর্যায়ে এর জন্য কী ধরনের মূল্য দিতে হয়েছে? বাংলাদেশে বিদ্যমান পিতৃতন্ত্রিক সমাজকাঠামোর মোকাবেলায় নারী আন্দোলন ও নারীবাদী চর্চা কীভাবে যৌন সহিংসতার শিকার ও তাঁদের স্বজনদের জন্য স্বীকৃতি আদায় ও অপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি তুলেছে সে সম্পর্কে এই বইয়ের সব লেখকই অনুসন্ধান করেছেন। এই প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে তারা নারীবাদী গোষ্ঠীদের নানা প্রয়াসের সাক্ষী হয়েছেন এবং সেগুলোকে উপযুক্ত মনযোগ দিয়েছেন, কেননা এই প্রয়াসটুকু না থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত ও তাদের স্বজনদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে।
আমেনা মহসিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে শিক্ষকতা করেন। অধিকার সংশ্লিষ্ট বিষয়, রাষ্ট্র, গণতন্ত্র, সামরিক-নাগরিক সম্পর্ক এবং মানুষের নিরাপত্তা সম্পর্কে তিনি প্রচুর লেখালেখি করেছেন।
সেলিনা হোসেন (জন্ম: ১৯৪৭) বাংলাদেশের অগ্রগণ্য কথাসাহিত্যিকদের অন্যতম। পেশা: চাকুরী, বাংলা একাডেমী। গল্প ও উপন্যাসে সিদ্ধহস্ত। এ পর্যন্ত ৭টি গল্প সংকলন, ২০টি উপন্যাস, ৫টি শিশুতোষ গল্প, ৫টি প্রবন্ধের বই প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও সম্পাদনা করেছেন বেশ কিছু বই। সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে প্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক স্বর্ণপদক (১৯৬৯); বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৮০); আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮১); কমর মুশতরী স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮৭); ফিলিপস্ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮); অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৪)। তাঁর গল্প উপন্যাস ইংরেজি, রুশ, মেলে এবং কানাড়ী ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
হামিদা হোসেন ঢাকাস্থ আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও গবেষণা পরিচালক। নারী অধিকার, শ্রমিকের অধিকার এবং মানবাধিকার নিয়ে তাঁর বিস্তর লেখালেখি আছে।