- Shop
- নিসর্গ, নির্মাণ ও নান্দনিক ভাবনা
নিসর্গ, নির্মাণ ও নান্দনিক ভাবনা
Language: Bangla |
Tags :
Book Info
প্রকৃতির সঙ্গে মিথোজীবিতানির্ভর জীবনচর্চা ও যন্ত্রসভ্যতার দ্বন্দ্ব খুবই মৌলিক। এক্ষেত্রে লাভালাভের হিসাব মিলানো সহজ নয়। এ নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হয়েছে বিদেশে, আমাদের দেশে অবশ্য কম। নিসর্গ, নির্মাণ ও নান্দনিক ভাবনা এই ধরনেরই একটি বই এবং সেজন্য কিছুটা হলেও নতুনত্বের দাবিদার। আরেকটি প্রসঙ্গও এতে গুরুত্বসহকারে আলোচিত যা বিশেষজ্ঞদের চিন্তার খোরাক যোগাবে—সেটা প্রকৃতি সংরক্ষণকর্মে সৌন্দর্যের অগ্রাধিকার, হোক বনায়ন, নদীশাসন কিংবা অভয়ারণ্য প্রতিষ্ঠা। বইতে ‘উদ্ভিদ উদ্যান ঐতিহ্য’, ‘ব্রিটিশ-ভারতে উদ্ভিদসন্ধান’, ‘বিভূতিভূষণের গাছগাছালি’র মতো সিরিয়াস প্রবন্ধের সঙ্গে আছে অনেকগুলি সাদামাটা লেখাও-গাছের কথা, ফুলের কথা, পাখির কথা, বিধ্বস্ত বনের কথা, কৈশোরস্মৃতি, ভ্রমণবৃত্তান্ত, প্রকৃতিপ্রেমী কিছু মানুষের কথা। কিন্তু এগুলিও লেখকের দীর্ঘদিনের শ্রম ও যত্নে গড়া ওই গোটা কাঠামোর অংশ এবং এজন্য সাধারণত্বটা বাহ্য, অনেকটা মুক্তাগর্ভ শুক্তির মতো। আমাদের প্রকৃতিসাহিত্য যথেষ্ট সমৃদ্ধ। অনিবার্য রবীন্দ্রনাথ সর্বত্র। আছেন বিভূতিভূষণ ও জগদীশচন্দ্র। কিন্তু বর্তমান তীব্র পরিবেশসংকট এতে যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে এখনকার সাহিত্যে তা তেমন ছাপ ফেলেনি। নিসর্গ, নির্মাণ ও নান্দনিক ভাবনা সেই ঘাটতি অন্তত কিছুটা পূরণ করবে। নিসর্গপ্রেমী ও উদ্ভিদবিদ্যার শিক্ষক দ্বিজেন শর্মা দীর্ঘকাল ইউরোপে বসবাস করেছেন, সেখানকার পার্ক ও বাগানগুলি দেখেছেন, উদ্যান ও পুষ্পমেলায় যোগ দিয়েছেন, তাতে স্বদেশের প্রকৃতির সঙ্গে তার আজন্ম ঘনিষ্ঠতার অর্জন আরও বিকশিত, বিস্তৃত হয়েছে যা এই লেখাগুলিকে ঐশ্বর্যমণ্ডিত ও আকর্ষণীয় করেছে। বিষয়বস্তুর নতুনত্ব ছাড়াও লেখকের অনবদ্য রচনাশৈলী বইটির অতিরিক্ত সম্পদ। শুধু পরিবেশকর্মী বা প্রকৃতিপ্রেমী নন, গোটা প্রজন্মকে বইটি প্রকৃতিকে নতুনভাবে দেখতে, ভালবাসতে উদ্বুদ্ধ করবে।
দ্বিজেন শর্মা
দ্বিজেন শর্মা (২৯ মে ১৯২৯-১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭) মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা থানার শিমুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা চন্দ্রকান্ত শৰ্মা, মাতা মগ্নময়ী দেবী। স্নাতকোত্তর পাঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (১৯৫৮)। শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু: বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ (১৯৫৮-৬২), ঢাকার নটর ডেম কলেজ (১৯৬২-৭৪)। অতঃপর মস্কোর প্রগতি প্রকাশনে অনুবাদক (১৯৭৪-৯১)। শিক্ষক, লেখক, অনুবাদক – সর্বত্রই স্বনামখ্যাত। তিনি বাংলা একাডেমি ও শিশু একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদকসহ নানান সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। বহুমুখী কৌতূহল, প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি, পরিবেশ সুরক্ষা এবং নগর ও উদ্যান সৌন্দর্যায়নের এই নিরলস কর্মী আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের একজন বর্ণাঢ্য মানুষ ছিলেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে: সতীর্ঘ বলয়ে ডারউইন, শ্যামলী নিসর্গ, জীবনের শেষ নেই, সপুষ্পক উদ্ভিদের শ্রেণীবিন্যাস, ফুলগুলি যেন কথা, বিগল যাত্রীর ভ্রমণ কথা, গহন কোন বনের ধারে, মম দুঃখের সাধন, গাছের