জহুরুল হক জন্ম ১৯২২ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাজারামপুর গ্রামে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক এবং প্রথিতযশা বিজ্ঞান-লেখক ছিলেন। জহুরুল হক ছদ্মনামে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখি করেছেন, পুরো নাম ড. এ এম জহুরুল হক। পিতার নাম মোহাম্মদ তাবারক আলি। পদার্থবিদ্যায় বিএসসি (অনার্স) করে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে এমএসসি এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডন ইউনিভার্সিটির অধীনে কুইন মেরি কলেজ থেকে ১৯৬২ সালে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। ১৯৫২ সাল থেকে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ কৌশল বিভাগে শিক্ষকতার কাজে নিবেদিতভাবে জড়িত থেকে ১৯৮৩ সালে অবসর নেন। ১৯৭০ সাল থেকে একটানা ১২ বছর বিভাগীয় প্রধানের এবং দুই দফায় (১৯৭২-৭৪, ১৯৮২-৮৩) অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে ড. রশীদ চেয়ার অলংকৃত করেছিলেন। অজস্র মৌলিক বইয়ের লেখক জহুরুল হক অনুবাদক হিসেবেও খ্যাতিমান ছিলেন, লেখালেখির স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৯ সালে ‘বাংলা একাডেমি পুরস্কার’ এবং ১৯৯৬ সালে ‘স্বাধীনতা পদক’ পান। ‘বিজ্ঞানের খেলাঘর’ (অনু. ১৯৫৯), ‘মনু বর্ণালি’ (১৯৬৪), ‘জীবন ও বিজ্ঞান’ (১৯৬৮), ‘তড়িৎ কৌশল পরিচয়’ (১৯৭২), ‘হাল সাকিন’ (১৯৭৫), ‘বিজ্ঞান নিয়ত সঙ্গী’ (১৯৮৪), ‘আগুন পানির কথা’ (১৯৮৫), ‘আগুনের কি গুণ’ (দুই খণ্ড, ১৯৮৮), ‘ছোট্ট এক রাজকুমার’ (অনু. ১৯৮৬), ‘শক্তি চাই’ (১৯৮৬), ‘নিষিদ্ধ নিঃশ্বাস’ (১৯৯১), ‘বিজ্ঞানের চেতনা’ (১৯৯৩), ‘বিশ শতকের বিজ্ঞান ভাবনা’ (১৯৯৬) ইত্যাদি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ। বিজ্ঞানচর্চার ও বিজ্ঞান-সংস্কৃতির বহু কাজে আজীবন নিয়োজিত অধ্যাপক জহুরুল হক ১৯৯৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন।