শংকর জন্ম ৭ ডিসেম্বর ১৯৩৩, পথের পাঁচালীর দেশ বনগ্রামে, তদানীন্তন যশোহর জেলায়। আইনজীবী পিতৃদেব হরিপদ মুখোপাধ্যায় ভাগ্যসন্ধানে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শুরুর আগেই কলকাতার ওপারে হাওড়ায় চলে আসেন, সেখানেই স্কুলের শিক্ষা, বড় হয়ে ওঠা এবং সাহিত্যসাধনার শুরু। সাহিত্য জীবনের প্রযোজক, পরিচালক ও সুরকার শঙ্করীপ্রসাদ বসুর সঙ্গে পরিচয় এই হাওড়াতেই। ১৯৪৭ সালে পিতৃদেবের অকালমৃত্যুর পরে মাতৃদেবী অভায়ারাণীর অভয়ারণ্যে কঠিন জীবনসংগ্রামের শুরু সংখ্যাহীন জীবিকার মাধ্যমে – কখনও পথের ফেরিওলা, কখনও টাইপরাইটার ক্লিনার, কখনও প্রাইভেট টিউশনি, কখনও হাওড়ার খ্যাতনামা বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউশনে শিক্ষকতা, কখনও অখ্যাত জুট ব্রোকারের কনিষ্ঠ কেরানি। কখনও টাইপিস্ট, কখনও স্টেনো এবং কোনো একসময় কলকাতার শেষ ইংরেজ ব্যারিস্টার নোয়েল ফ্রেডরিক বারওয়েলের বাবু হিসেবে কলকাতা হাইকোর্টের আদালতী কর্মক্ষেত্রে পদার্পণ।অনন্য এই অভিজ্ঞতা থেকে ১৯৫৪ সালে শুরু দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিক রচনা 'কত অজানারে'। তারপর থেকে বিরতিহীন সৃষ্টির সাধনা, শরৎচন্দ্রের পর দুই বাংলার সর্বস্তরে এমন বিপুল জনপ্রিয়তা বাংলা কথাসাহিত্যের ইতিহাসে আজও লিপিবদ্ধ হয়নি। মধ্যপর্বে কোনো একসময়ে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে আইএ পাশ এবং বঙ্গবাসী রাত কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রী লাভ। একই সঙ্গে আরও অনেক আজব বৃত্তি থেকে কখনও ক্ষুধানিবৃত্তি ও কখনও অভিজ্ঞতা সঞ্চয়। আশা-আকাঙ্ক্ষা শংকরের বহুল পঠিত ও পাঠকনন্দিত উপন্যাসগুলির মধ্যে অন্যতম। ১৯৭৩ সালে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়।