Filters

সুভাষ ঘোষ (১৯৪৩) পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার হাসানপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমা করার পর চাকরি-জীবন মাত্র পাঁচ বছরের। তারপর সুদীর্ঘ সাড়ে চার দশকের উপর নির্মাণ ব্যবসায় জড়িত। বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান অ্যাসোসিয়েটেড বিল্ডার্স কর্পোরেশন লিমিটেড (এবিসি)-এর চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত। দীর্ঘ পঁচাত্তর বছরের জীবনে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। সাতচল্লিশের দেশভাগকালে প্রতিবেশি ও স্বজনদের দেশত্যাগ দেখেছেন খুব ছোটবেলায়। কলেজ-জীবনে নিজের চোখে দেখেছেন পাকিস্তান সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা - প্রথমে বাষট্টিতে পাবনা শহরে এবং পরে চৌষট্টিতে ঢাকা শহরে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেশত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দুঃখজনক রাজনৈতিক পালাবদলগুলোকে খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেছেন। এতোকিছুর পরও কখনও দেশত্যাগ করার কথা ভাবেননি। ছেলেমেয়েদের বিদেশে পড়াশুনা করালেও তাদেরকে দেশে স্থিত হতে অনুপ্রাণিত করেছেন। সারা জীবন শারীরিক নানা সমস্যা নিয়েও তিনি আত্মীয় অনাত্মীয় নির্বিশেষে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি পৃথিবীর বহু দেশ ঘুরেছেন। পূর্ব আর পশ্চিমের জীবনযাত্রার বৈচিত্র্য তাঁকে মুগ্ধ করেছে। তাঁর শৈশবকাল কেটেছে এমন এক গ্রাম্য পরিবেশে যা শতাব্দী ধরে ছিল স্থবির, অথচ তাঁর বর্তমান কাল কাটে পাশ্চাত্যের প্রায় সমকক্ষ এক উন্নত পরিবেশে। এক জীবনে এত ইতিহাস আর বৈচিত্র্য দেখার সুযোগকে তিনি সৌভাগ্য বলে বিবেচনা করেন। ৭৫ বছর বয়সেও তিনি স্বপ্ন আঁকেন এক সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য কাজ করে যাওয়ার। তাঁর প্রথম আত্মজৈবনিক রচনা তিন দুয়ারের কোলে (২০১৮) প্রকাশিত হয় দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড থেকে।