একাত্তরকে নিয়ে এযাবত যারা লিখেছেন তাঁদের অধিকাংশই যুদ্ধের কুশীলব, নয়তো মসিজীবী। কিন্তু এ বইয়ের লেখক এসবের কোনটাই নন। তিনি এমন একজন ব্যক্তি, যিনি সকল অর্থেই একজন সাধারণ মানুষ, কিন্তু প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার অধিকারী। বাংলাদেশে এঁদের মত মানুষ মঞ্চে উঠেন না কিন্তু মিটিংয়ে-মিছিলে থাকেন, একশ' চুয়াল্লিশ ধারা কারফিউ ভাঙ্গেন। বেঁচে থাকা এঁদের নিয়তি, মৃত্যু এসে এঁদের মহীয়ান করলেও করতে পারত। এরা ধ্বংস ও সৃষ্টির কারিগর, উপাদান তো বটেই। সবার মত এঁরাও একাত্তরের উত্তাপে তপ্ত হয়েছেন, বিজয়ে হয়েছেন উদ্বেলিত, মুক্তিতে পেয়েছেন অনির্বচনীয় আনন্দ। একাত্তরে তাঁদের কেমন কেটেছিল, একাত্তরে তাঁরা কি করেছিলেন, এদেশে একাত্তর সৃষ্টি হবার পেছনেই বা তাঁদের কি ভূমিকা ছিল-এসব বিষয় তাই ইতিহাসের আবশ্যকীয় উপাদান।
এই প্রেক্ষাপটে আমরা এই রচনাটিকে একটি ‘কেস স্টাডি’ হিসাবে গ্রহণ করেছি। দেশের প্রতিটি কোনায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে এরকম মানুষদের জবানী আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে আরো প্রসারিত এবং সমৃদ্ধ করবে, এই আশা নিয়ে বইটি প্রকাশ করা হয়েছে।
আব্দুল মান্নান খান (জ.১৯৪৯)-এর জন্ম যশোর জেলার বাঘারপাড়া থানার অন্তর্গত পাঠান পাইকপাড়া গ্রামে। ঝিনাইদহ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে ঢাকায় আসেন ও ১৯৭২ সালে ঢাকার মতিঝিল টিএন্ডটি নাইট কলেজ থেকে ডিগ্রি পাশ করেন।
১৯৭৩ সালে তকালীন এজিবি (সিভিল) অফিসে তিনি অডিটর পদে যোগদান করেন। পরে ১৯৭৮ সালে তৎকালীন জনশিক্ষা পরিচালকের অধীনে সহকারী হিসাব রক্ষণ অফিসার পদে যোগ দেন। বর্তমানে ঢাকায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে সহকারী শিক্ষা অফিসার হিসাবে কর্মরত।