রবীন্দ্রনাথ মানবধর্ম ও মানুষের সৌন্দর্য তৃষ্ণার শ্রেষ্ঠ বাঙালী প্রতিভূ এবং এ পথেই তিনি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দিশারী। রবীন্দ্রনাথের এ আবির্ভাব হঠাৎ হয়নি, এর পেছনে রয়েছে পাঁচ হাজার বছরের ভারতীয় সভ্যতা, দর্শন ও সংস্কৃতির বিবর্তন চেতনা যা মোগল যুগে একটি সার্বজনীন পরিণতি লাভ করে। রবীন্দ্রনাথের জীবন দর্শন ও তাঁর সুন্দরের সাধনার অনেক উপাদানই মোগন দর্শন ও সংস্কৃতিসঞ্জাত। এই গ্রন্থে লেখক মোগল দর্শন ও সংস্কৃতির সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সেই সম্পর্ক সন্ধানে নিয়োজিত হয়েছেন।
লেখক খুঁজে দেখেছেন, অসাম্প্রদায়িক সার্বজনীন নান্দনিক প্রগতিশীল মোগল সংস্কৃতির সঙ্গে ধর্মসংস্কারমুক্ত মানববাদী রবীন্দ্রনাথের কী অপরূপ মিল! মোগল সংস্কৃতি ঘেঁটে তুলে এনেছেন এক ‘সর্বধর্ম সমদর্শী’ সৌন্দর্য-সাধক রবীন্দ্রনাথ। এর ধর্মনিরপেক্ষ সার্বজনীন শিল্প সৌন্দর্যমন্ডিত আলোকচ্ছটা ও তার নান্দনিকতা কবিগুরুর ওপর কতটা প্রভাব বিস্তার লাভ করেছিল বর্তমান গ্রন্থে সেই গবেষণাই স্থান লাভ করেছে।
গ্রন্থটিতে একদিকে যেমন প্রাচীন যুগ থেকে শুরু করে মধ্যযুগ এবং সেই ধারাবাহিকতায় মোগল শাসনের বাবুর, হুমায়ুন, আকবরের পথ ধরে ভারতবর্ষের সুদীর্ঘ ইতিহাস-ঐতিহ্যের ভেতরে নিহিত সাংস্কৃতিক দর্শন বিশ্লেষণ করা হয়েছে, অন্যদিকে উপস্থাপন করা হয়েছে রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য দর্শন, দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, ঠাকুরবাড়ির পরিচিতি এবং সেখানে মোগল সংস্কৃতির উপস্থিতি। এভাবেই বইটিতে একটি বড় কালপর্ব মোগল আমল এবং বটবৃক্ষতুল্য রবীন্দ্রনাথের সজীব চিত্র ফুটে উঠেছে।
সুচিঃ
১, অবতরণিকা / ২, ঐতিহাসিক পটভূমিকা / ৩, মধ্যযুগ / ৪, মোগল শাসন / ৫, নূরজাহান- জাহানারা-ঠাকুরবাড়ীর নারী / ৬, আবূল ফজল তুলসী দাস-মোগল যুগে বৈষ্ণব / ৭, রবীন্দ্রনাথ