শাহ এ এম এস কিবরিয়া ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক সম্মানসহ ১৯৫৩ সালে একই বিষয়ে এম.এ. ডিগ্রী লাভ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে তিনি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯৫৪ সালে তদানীন্তন পাকিস্তান সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিসেস পরীক্ষায় প্রথম স্থান লাভ করে পাকিস্তান পররাষ্ট্র সার্ভিসে যোগ দেন। ১৯৫৭ সাল থেকে কোলকাতা, কায়রো, নিউইয়র্ক, তেহরান, জাকার্তা, ইসলামাবাদ ও ওয়াশিংটনে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ মিশন প্রতিষ্ঠা করে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে জনমত গঠনে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে নবগঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মহাপরিচালক (রাজনৈতিক বিষয়ক) হিসেবে যোগদান করেন। একই সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সচিব পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ফিজিতে বাংলাদেশের হাকমিশনার, জেনেভায় জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত এবং স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্তি লাভ করেন। ৭৭ জাতি গ্রুপের ও নৌপরিবহন সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। জনাব কিবরিয়া ১৯৭৮ সালে পররাষ্ট্র সচিব এবং ১৯৮১ সালে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সংক্রান্ত জাতিসংঘ কমিশন (এসকাপ)-এর নির্বাহী সচিব নিযুক্ত হন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত তিনি ক্যাম্বোডিয়ায় মানবিক সহায়তা প্রদান সংক্রান্ত কার্যক্রমের পরিচালনা ও সমন্বয়ের বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯২ সালে স্থায়ীভাবে দেশে ফিরে এসে তিনি রাজনীতিতে যোগদান করেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি সেই সরকারের অর্থমন্ত্রী নিযুক্ত হন এবং সাফল্যের সঙ্গে দেশের অর্থনীতি পরিচালনান করেন। মন্ত্রী থাকাকালে তিনি ১৯৯৭ সালে ইকনোমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন, ১৯৯৮ সালে নির্বাচিত হন ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভলপমেন্টের গভর্নিং কাউন্সিলের সভাপতি। ২০০১ সালে তিনি হবিগ্ণগজ-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০২ সালের এপ্রিল মাস থেকে তিনি মৃদুভাষণ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। ইউপিএল থেকে প্রকাশিত এই লেখকের অন্যান্যগ্রন্থ: মৃদুভাষণ, দ্য ইমার্জিং নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার এবং বাংলাদেশ অ্যাট দ্য ক্রস রোডস পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে।